মেহেদী হাসান (কালীগঞ্জ) ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের অবৈধভাবে জমি দখল করে বাওড়ে মাছ চাষ করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ৭ গ্রামের সাধারণ মানুষ। সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলার মহিষাহাটি গ্রামের বাওড় পাড়ে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে কালীগঞ্জ উপজেলার মাজদিয়া, মহিষাহাটি, বাদেডিহি, জলকর মাজদিয়া, জঘনাথপুর, বাদুরগাছা ও সোনালীডাঙ্গা গ্রামের মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
এদিকে বাওড়ে জোরপূর্বক মাছ দেওয়াকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার গ্রামবাসীদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মহিষাহাটি গ্রামের মোহাম্মদ আলী। অভিযোগে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাওড় পাড়ে টহল দেয় যৌথবাহিনীর সদস্যরা।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ১৪৬০ বিঘা জমি নিয়ে মাজদিয়া বাওড়। এই বাওড় নিয়ে সরকারের সাথে প্রায় ৪০ বছর ধরে মামলা চলমান। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বারবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ও তার ভাই ফরহাদ স্থানীয় জেলে সম্প্রদায়ের মানুষদের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে তিন বছরের জন্য বাওড়ে মাছ চাষ করার জন্য নিয়েছিল। কিন্তু এই বাওড়ে জেলে সম্প্রদায়ের মৎস্য সমিতির মাছ ধরা বা ছাড়ার কথা। কেউ কাউকে লিখে দেওয়ার এখতিয়ার নেই। কিন্তু ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ফরহাদ হোসেন তার আত্মীয় ঝিনাইদহের শামীম হোসেনকে লিখে দেন। শামীম হোসেন বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। এরপর শামীম হোসেনসহ বারবাজার এলাকার স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন গত শুক্রবার বাওড়ে মাছ ছাড়তে গেলে স্থানীয়রা বাঁধা দেয়। এই বাওড় উন্মুক্ত রাখার দাবি তাদের।
এ সময় বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অবৈধভাবে জমি দখল করে বাওড়ে মাছ চাষ করা হয়েছে। এতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় বাওড়ের পাশের জমিতে কোন চাষ করা যায় না। এতে বিপাকে পড়ে বাওড় পাড়ের জমির চাষীরা। এখন আবার আওয়ামী লীগের কিছু মানুষ বিএনপির সাথে মিশে বাওড়টি দখল করে মাছ চাষ করতে চাই। তারা এই বাওড় উনমুক্ত রাখার দাবি জানান।
কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহিন আলম জানান, বাওড়টি নিয়ে হাইকোর্টে প্রায় ৪০ বছর ধরে মামলা চলমান। এই বাওড়ে মাছ চাষ করার জন্য বর্তমানে কেউ কাউকে লিখে দেওয়ার এখতিয়ার নেই। সর্বশেষ ২৫ জন মৎস্যজীবি সদস্য বাওড়টি লিজ নিয়েছিল। জানামতে বাওড়টি উন্মুক্ত থাকার কথা।
Leave a Reply