1. news@sadhinbanglanews24.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:০৫ পূর্বাহ্ন

আত্মরক্ষা: প্রকৃতির প্রথম আইন

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২৫
  • ১৯ বার
আত্মরক্ষা হলো এমন একটি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি যা প্রত্যেক প্রাণীর মধ্যে প্রকৃতিগতভাবে বিদ্যমান। এটি মানুষেরই নয়, পৃথিবীর প্রতিটি জীবের মধ্যেই অন্তর্নিহিত। আত্মরক্ষা শুধু শারীরিক নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত নয়, বরং এর মধ্যে রয়েছে মানসিক, সামাজিক ও নৈতিক দিক থেকেও নিজেকে রক্ষা করার প্রক্রিয়া। এই প্রবৃত্তি আমাদেরকে সতর্ক করে এবং বিপদ বা আক্রমণের সম্মুখীন হলে নিজেকে রক্ষা করতে উদ্বুদ্ধ করে। এজন্য আত্মরক্ষা প্রাকৃতিকভাবে প্রথম আইন বলে বিবেচিত হয়।
আত্মরক্ষার প্রাকৃতিকতা
প্রকৃতিতে যদি আমরা একটু গভীরভাবে নজর দেই, তবে দেখব যে প্রতিটি প্রাণী কোনো না কোনোভাবে আত্মরক্ষা কৌশল প্রয়োগ করে থাকে। বাঘ তার নখ এবং দাঁত ব্যবহার করে, সাপ বিষাক্ত দাঁত দিয়ে আক্রমণ প্রতিহত করে, আর পাখিরা তাদের ডানা ব্যবহার করে শত্রুর হাত থেকে পালিয়ে বাঁচে। মানুষের ক্ষেত্রে, বুদ্ধিমত্তা ও কৌশলই হলো আত্মরক্ষার প্রধান অস্ত্র।
মানুষের ইতিহাসেও আত্মরক্ষার প্রবৃত্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আদিম যুগে মানুষ যখন বন্য প্রাণী ও প্রকৃতির বিপদ থেকে বাঁচার জন্য শিকার করত, তখন তাদের বেঁচে থাকার জন্য এই আত্মরক্ষার প্রবৃত্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আজও, আত্মরক্ষার এই প্রকৃতিগত প্রবৃত্তি আমাদের মধ্যে বিরাজমান এবং এটি আমাদের প্রতিদিনের জীবনে প্রভাব ফেলছে।
শারীরিক আত্মরক্ষা
শারীরিক আত্মরক্ষা হলো সরাসরি আঘাত বা আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করা। এটি হতে পারে মার্শাল আর্ট, আত্মরক্ষার কৌশল বা অস্ত্রের ব্যবহার। আজকের আধুনিক সমাজে আত্মরক্ষা শিক্ষার গুরুত্ব ক্রমবর্ধমান, বিশেষ করে নারীদের জন্য, যারা প্রায়ই সহিংসতার শিকার হয়। বিভিন্ন আত্মরক্ষা প্রশিক্ষণ যেমন- কারাতে, তায়কোন্ডো বা জুডো শেখা মানুষকে শারীরিকভাবে মজবুত করে তোলে এবং বিপদের মুহূর্তে দ্রুত সাড়া দিতে সক্ষম করে।
মানসিক ও সামাজিক আত্মরক্ষা
শারীরিক আঘাতের মতো মানসিক আঘাতও ব্যক্তির ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। মানসিক আত্মরক্ষা হলো নিজেকে নেতিবাচক প্রভাব থেকে রক্ষা করা এবং মানসিক সুস্থতা বজায় রাখা। এটি মানসিকভাবে দৃঢ়তা, আত্মবিশ্বাস ও ইতিবাচক চিন্তাধারা গড়ে তোলে। একইভাবে, সামাজিক আত্মরক্ষা হলো সমাজের চাপ ও প্রভাব থেকে নিজেকে রক্ষা করা। সমাজের নানা বাধা-বিপত্তি বা নেতিবাচক চিন্তা-চেতনা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা মানে নিজের নৈতিকতা ও মূল্যবোধকে সুরক্ষিত রাখা।
আত্মরক্ষার নৈতিক ও আইনগত দিক
আত্মরক্ষা শুধু ব্যক্তিগত নিরাপত্তার প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটি নৈতিক ও আইনগত দৃষ্টিকোণ থেকেও বিবেচনা করা হয়। বিশ্বব্যাপী আইন অনুসারে, আত্মরক্ষার অধিকার স্বীকৃত। যদি কোনো ব্যক্তি নিজের জীবন বা সম্পত্তি রক্ষা করতে গিয়ে কোনো আঘাত করে থাকে, তবে আইন অনুযায়ী তাকে অপরাধী হিসেবে গণ্য করা হয় না। আত্মরক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা একটি ন্যায়সঙ্গত ও মানবিক অধিকার।
উপসংহার
প্রকৃতির প্রথম আইন হিসেবে আত্মরক্ষা আমাদের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষার প্রধান অস্ত্র। এটি কেবল শারীরিক বিপদ থেকে নয়, মানসিক ও সামাজিক চাপ থেকেও আমাদের রক্ষা করে। প্রকৃতিগতভাবে আমাদের মধ্যে যে আত্মরক্ষার প্রবৃত্তি বিদ্যমান, তা আমাদের বেঁচে থাকার মৌলিক ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। এই প্রবৃত্তির যথাযথ চর্চা ও বিকাশ আমাদেরকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সুরক্ষিত ও শক্তিশালী করতে সহায়তা করে।
নিজেকে রক্ষা করার এই প্রাকৃতিক প্রবৃত্তি আমাদের জীবনে বারবার প্রমাণ করে যে আত্মরক্ষা সত্যিই প্রকৃতির প্রথম আইন।
অ্যাডভোকেট রাশেদুল হক রিগান, জজকোট ঝিনাইদহ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

আর্কাইভ

January ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Dec    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  

স্বাধীন বাংলা নিউজ 24.com limited কর্তৃক প্রকাশিত।

Theme Customized By BreakingNews