
পরেশ দেবনাথ, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি
বাংলা সাহিত্যের অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত-এঁর ২০১তম জন্মবার্ষিকী ও মধুমেলা-২০২৫ জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মহাকবি-র জন্মস্থান কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়িতে সাত দিনব্যাপী মধুমেলার উদ্বোধন করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি-) বিকেলে আলোচনা সভার পূর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ সরকার মেলার মূল ফটকে ফিতা কেটে, বেলুন ও শান্তির পায়রা উড়িয়ে শুভ উদ্বোধন করেন।
যশোর জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে মধুমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাগরদাঁড়ির মধুমঞ্চে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর আলম সিদ্দীক, যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবির, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও কেশবপুর উপজেলা শাখার সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা জামায়েতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, যশোর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট ইসহাক, যশোর ইন্সটিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু, যশোর প্রাচ্যসংঘের প্রতিষ্ঠাতা লেখক গবেষক বেনজীন খান, খুলনা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক লাভলী ইয়াসমিন, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক মোক্তার আলী ও যশোর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব জেসিনা মুর্শিদ প্রাপ্তি।
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যশোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সাগরদাঁড়িতে ২৪ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী এ মধুমেলার আয়োজন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন, কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন। মেলা উপলক্ষে সাগরদাঁড়িকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। কপোতাক্ষ নদ পাড়ের দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চলের লাখ লাখ মধুভক্তের উপস্থিতিতে কবির জন্মভূমির স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদ পাড়, জমিদার বাড়ির আম্রকানন, বিদায় ঘাট, মধুপল্লীসহ মুখরিত হয়ে উঠবে মধুমেলা প্রাঙ্গণ। এবারের মধুমেলায় দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য মধুমঞ্চে কেশবপুর ও যশোরের শিল্পীগোষ্ঠীর পাশাপাশি দেশবরেণ্য কবি, সাহিত্যিক ও শিল্পীদের পরিবেশনা মূখরিত হয় উঠবে। এর পাশাপাশি প্যান্ডেলে সার্কাস, যাদু প্রদর্শনী ও মৃত্যুকূপ রয়েছে। শিশুদের বিনোদনের জন্য রয়েছে, নাগরদোলাসহ বিভিন্ন আয়োজন। এছাড়াও থাকছে কুটির শিল্পসহ গ্রামীণ পসরা, কৃষিমেলা ইত্যাদি। তাছাড়া বিশেষ আকর্ষণ মণিরামপুর আনন্দ অপেরার যাত্রাপালা: “চরিত্রহীন”।
মেলার প্রথম দিনেই কপোতাক্ষ নদ পার সহ মেলা মাঠে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়। এবার মেলার ভেতর কৃষি মেলা করায় সেখানেও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। দর্শনার্থীদের মেলার মাঠ ঘুরে পছন্দের জিনিস পত্র ক্রয় করতে দেখা যায়। কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ‘দর্শনার্থীদের মেলা উপভোগ করতে ও যাতায়াতে যাতে কোন সমস্যা না হয় তার জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। মেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি প্রশাসন ব্যাপক তৎপর থাকবে।’
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি সাগরদাঁড়ি গ্রামের জমিদার দত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা জমিদার রাজনারায়ণ দত্ত আর মা জাহ্নবী দেবী। ঊনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট বাঙালি কবি ও নাট্যকার তথা বাংলার নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন মহাকবি মধুসূদন দত্ত মারা যান।
Leave a Reply