এম এম কলেজ প্রতিনিধি – রবিউল ইসলাম
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজ। ১৯৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজ শুরুতে ‘যশোর কলেজ’ নামে পরিচিত ছিল। এই কলেজের জন্ম হয়েছিল একদল দেশপ্রেমিক, বিদ্যোৎসাহী মানুষের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। শ্রী মহিতোষ রায় চৌধুরী, যিনি পশ্চিমবঙ্গের বঙ্গবাসী কলেজের অধ্যাপক ছিলেন, তিনিই প্রথম কলেজ স্থাপনের ধারণা দেন এবং স্থানীয় সমাজপতিদের সহায়তায় কলেজের ভিত্তি স্থাপন করেন।
প্রথমদিকে কলেজটি যশোর শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অস্থায়ী ভবনে চালু হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভবনটি মিত্রবাহিনীর দখলে গেলে কলেজ সরিয়ে নেওয়া হয় ঝিকরগাছার হাটবাড়িয়ায়। যুদ্ধশেষে এটি পুনরায় যশোর শহরে ফিরে আসে এবং কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের নামে নামকরণ করা হয় “মাইকেল মধুসূদন কলেজ”।
১৯৫০-এর দশকে কলেজটিতে বি.কম এবং বি.এসসি পাস কোর্স চালু হয়। ১৯৬২ সালে চালু হয় অনার্স কোর্স এবং ১৯৬৮ সালের ১ মে এটি সরকারিকরণ হয়। এরপর কলেজটি একে একে বিভিন্ন বিষয়ে অনার্স এবং মাস্টার্স কোর্স চালু করে একটি পূর্ণাঙ্গ ডিগ্রি কলেজে রূপান্তরিত হয়।
বর্তমানে কলেজটিতে প্রায় ৪০,০০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করে, রয়েছে ১৭টি অনার্স বিভাগ ও ১৬টি মাস্টার্স বিভাগ। কলেজের সুবিস্তৃত ক্যাম্পাসে রয়েছে লাইব্রেরি, আধুনিক বিজ্ঞানাগার, হোস্টেল, খেলার মাঠ, ক্যান্টিন, মসজিদ এবং আরও অনেক সুযোগ-সুবিধা।
এই কলেজ শুধু যশোর নয়, সমগ্র বাংলাদেশের শিক্ষায় বিশেষ অবদান রেখে চলেছে। এটি মাইকেল মধুসূদনের নামের মর্যাদা যেমন বহন করছে, তেমনি দেশের শিক্ষায়ও ছড়াচ্ছে তার জ্ঞানের আলো।
Leave a Reply