বিদেশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ৩৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে একটি প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে। টাকা ফেরত চাইলে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। শনিবার দুপুরে প্রেস ক্লাব যশোরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার তৈলধান্যপুড়া গ্রামের শরিফুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে শরিফুল ইসলামের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার শ্বশুর শাহাদত হোসেন। তিনি জানান, শরিফুল ইসলামের ছেলে শাহেদ আহম্মেদকে ইতালিতে ভালো বেতনের চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রতারকরা প্রথমে ১৬ লাখ টাকায় চুক্তি করে। এরপর জমি বিক্রি, ঋণ এবং সহায়-সম্বল বিক্রির মাধ্যমে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে ধাপে ধাপে চুক্তির টাকা পরিশোধ করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, শাহেদকে ইতালিতে পাঠানোর কথা থাকলেও প্রতারক চক্র তাকে প্রথমে দুবাই, পরে কেনিয়া, উগান্ডা, রুয়ান্ডা হয়ে পাঠায় কাজাখস্তানে।
সেখানে পুলিশের হাতে আটক হলে অভিযুক্ত আলমগীর হোসেন তাকে মুক্ত করেন এবং পরে শাহেদকে লিবিয়ায় নিয়ে গিয়ে জিম্মি করে আরও ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। সবমিলিয়ে শরিফুল ইসলামের কাছ থেকে আদায় করা হয় মোট ৩৬ লাখ টাকা। এরপর শেষ পর্যন্ত শাহেদকে দেশে ফেরত পাঠানো হলেও টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। বরং টাকা ফেরত চাইলে নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন শরিফুল। এ ঘটনায় শরিফুল ইসলাম গত ২২ মে বাঘারপাড়া আমলি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন (সি.আর মামলা নম্বর-২৪৫/২৫)। মামলায় বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসন আইন, ২০১৩ এবং দণ্ডবিধির একাধিক ধারা উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন, একই গ্রামের নাজমুল হাসান বিপ্লব, বিপ্লবের পিতা হায়দার আলী, বিপ্লবের স্ত্রী কাকলী বেগম, চন্ডিপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে আলমগীর হোসেন ও অজ্ঞাত আরও তিন-চারজন। সংবাদ সম্মেলনে শরিফুল ইসলামের স্ত্রী স্বপ্না বেগম, ভাই রবিউল ইসলাম, মামা আজিজুল হক, আলতাব হোসেন, জামির হোসেন ও ভুক্তভোগী ছেলে শাহেদ আহম্মেদ উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রতারকদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও আত্মসাৎ করা ৩৬ লাখ টাকা ফেরতের দাবি জানান।
Leave a Reply